জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :-দ্রুত বাড়তে চলেছে দেশের সাংসদ সংখ্যা! নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের মঞ্চে এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নতুন লোকসভায় প্রথম ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেই দিলেন, আগামী দিনে সংসদের আসন বাড়লে যাতে স্থান সংকট না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য সংসদ আয়তনে বাড়ানো দরকার ছিল।প্রধানমন্ত্রী এদিন নিজের ভাষণে বলেন, ‘নতুন সংসদ বানানো নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চলছিল। কয়েক দশক ধরে পরিকল্পনা হচ্ছিল। সময়ের দাবি মেনেই সংসদ ভবনের উদ্বোধনের পরিকল্পনা করেছি আমরা।’ এরপরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনে যখন সংসদের সদস্যসংখ্যা সংখ্যা বাড়বে, তখন স্থান সংকুলান হবে না। তখন সাংসদরা বসবেন কোথায়? সেসব ভেবেই এই নয়া ভবন তৈরি।’ প্রায় ৯৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২২৪ আসন বিশিষ্ট সংসদ ভবনটি তৈরি হয়েছে। ৮৮৮টি আসন বিশিষ্ট লোকসভার অন্দরসজ্জার থিম জাতীয় পাখি ময়ূর। আবার ৩৮৪টি আসন বিশিষ্ট রাজ্যসভার অন্দরসজ্জা করা হয়েছে পদ্ম থিমের উপরে। অর্থাত্ বিজেপি (BJP) চাইলে লোকসভায় ৮৮৮টি পর্যন্ত আসন বাড়তে পারে। আবার রাজ্যসভার আসন বেড়ে হতে পারে ৩৮৪টি।বস্তুত, লোকসভার আসন সংখ্যা বৃদ্ধি নতুন কিছু নয়। এর আগেও বার দু’য়েক সংসদের নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যা বেড়েছে। আসলে সংবিধানের ৮১ নম্বর ধারা অনুযায়ী লোকসভার আসন সংখ্যা ঠিক করা হয়। এবং এটা ঠিক হয় দেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে। তাই লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়াতে সংবিধানের ৮১ ধারা সংশোধন করতে হবে। শেষবার ১৯৭৩ সালে লোকসভার (Lok Sabha) আসনসংখ্যা বেড়েছিল। ১৯৭১ সালের জনগণনার পর ১৯৭৩ সালে লোকসভার আসন সংখ্যা ৫০২ থেকে বাড়িয়ে ৫৪৫ করা হয়। তারপর থেকে প্রায় ৫ দশক এই আসন সংখ্যায় কোনও বদল আনা হয়নি। প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন একবার লোকসভার আসনসংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তাঁর মত ছিল, জনসংখ্যা যে হারে বেড়েছে, তাঁর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনপ্রতিনিধি সংখ্যাও বাড়ানো দরকার।বস্তুত, ১৯৭১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে ঠিক করা আসন সংখ্যা অনন্তকাল ধরে চলতে পারে না। কিন্তু আসনসংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও বাধা রয়েছে। সংবিধানের ৮১ নম্বর ধারা অনুযায়ী আপাতত ২০২৬ পর্যন্ত আসনসংখ্যা বাড়ানো যাবে না। যদিও, সংসদে সংখ্যার বলে গেরুয়া শিবির সেই ধারা সংশোধন করতেই পারে। কিন্তু আরেকটা মুশকিল হল, লোকসভার আসনসংখ্যা বাড়ে জনসংখ্যার ভিত্তিতে। তাই আসন বাড়ানোর জন্য আগে জনগণনা হওয়া জরুরি। এবার আসা যাক বিরোধীদের আশঙ্কার কথায়। কংগ্রেস তথা অন্য বিরোধীদের আশঙ্কার মূল জায়গা হল, ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজেদের সুবিধামতো আসন পুনর্বিন্যাস করে নেবে বিজেপি। আসলে জনসংখ্যার ভিত্তিতে যদি নতুন আসন বণ্টন করা হয় তাহলে দক্ষিণ ভারত বা পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলির তুলনায় গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে আসন সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। বিশেষ করে বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য যেখানে কিনা বিজেপি অত্যন্ত শক্তিশালী, সেখানে অনেক বাড়বে আসনসংখ্যা।