জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বাড়িয়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চান তিনি। চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে “বৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞা”র বিরুদ্ধে রাশিয়া ও চীন একসঙ্গে অবস্থান নিয়েছে।
রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত চার দিনের সফরে চীনে থাকবেন পুতিন। এটিকে “অভূতপূর্ব সফর” বলে আখ্যা দিয়েছে ক্রেমলিন। সফরের শুরুতেই তিনি অংশ নেবেন উত্তর চীনের তিয়ানজিন শহরে আয়োজিত শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO)-এর শীর্ষ সম্মেলনে। নিরাপত্তা কেন্দ্রিক এই সংস্থায় এখন ভারত ও ইরানসহ মোট ১০টি স্থায়ী সদস্য রয়েছে।
এরপর বেইজিংয়ে গিয়ে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাপানের আত্মসমর্পণের স্মৃতিচারণে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত রুশ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এখন চীন। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ রেকর্ড ২৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে। তেল ও গ্যাস সরবরাহের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য যেমন শূকর ও গরুর মাংস রফতানি করাও শুরু করেছে রাশিয়া। দুই দেশের লেনদেন এখন প্রায় পুরোপুরি রুবল ও ইউয়ানে সম্পন্ন হচ্ছে।
পুতিন বলেন, “আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও শিল্প-বাণিজ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত এগোচ্ছে। আগামীতেও এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে সেই সময়েই পুতিন ও শি জিনপিং ‘নো লিমিটস পার্টনারশিপ’ ঘোষণা করেন। গত এক দশকে দুই নেতা ৪০ বারেরও বেশি সাক্ষাৎ করেছেন।
উল্লেখযোগ্য যে, ইউক্রেন থেকে শিশুদের অবৈধভাবে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবুও তিনি চীন সফর করছেন, যা তাঁর কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।