জনতার কলম ত্রিপুরা তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি :- ফের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কে । সড়ক দুর্ঘটনা যেন কোনো মতে পিছু ছাড়তে চাই না তেলিয়ামুড়া বাসীর । এই বার নড়ে বড়ে তেলিয়ামুড়া ট্রাফিক ব্যবস্থার দরূন সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো পঞ্চাশোর্ধ এক বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মহিলার । জানা গেছে মৃত মহিলার নাম উমা রানি দেবনাথ গোস্বামী । বাড়ি জিরানিয়া এলাকায় । ঘটনা তেলিয়ামুড়া থানাধীন অম্পি চৌমুহনী এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ । ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মহিলা উমা রানী দেবনাথ গোস্বামী কল্যাণপুরের কোন একটা ধর্মীয় কাজ সেরে নিজ বাড়ি ফেরার জন্য তেলিয়ামুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত অম্পি চৌমুহনী এলাকায় আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের মোড়ে অটো রিকশা থেকে নেমে আগরতলা মুখী গাড়িতে উঠার উদ্দেশ্যে রাস্তা পারাপার হওয়ার মুহূর্তেই, TR 01Z 1672 নম্বরের একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার গাড়ি তাকে সজোড়ে ধাক্কা মারে । সঙ্গে সঙ্গেই বৈষ্ণবী আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন । সঙ্গে সঙ্গেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তেলিয়ামুড়া দমকল বাহিনীর কর্মীরা ও পথ চলতি সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় জাতীয় সড়কে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়া বৈষ্ণবী মহিলা’কে উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসলেও ততক্ষণে আর শেষ রক্ষা হয় নি বৈষ্ণবীর । সঙ্গে সঙ্গেই মহকুমা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক উমা রানি দেবনাথ গোস্বামী’কে মৃত বলে ঘোষণা করেন । তবে আজকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনার মৃত্যুর পেছনে যে তেলিয়ামুড়ার নড়ে বড়ে কঙ্কালসার ট্রাফিক দপ্তরের খাম-খেয়ালিপনা রয়েছে তাতে কোন অবকাশ নেই বললেই চলে । তবে আজকের এই সড়ক দুর্ঘটনায় বৈষ্ণবীর মৃত্যুতে যেমন চাঞ্চল্য বিরাজ করছে ঠিক তেমনি আজকের এই সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাকে সামনে রেখে তেলিয়ামুড়ার সাধারণ মানুষ একরাশ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ তুলে ধরেছেন । সাধারণ মানুষের একরাশ অভিযোগ দীর্ঘ প্রায় ১ বছর যাবৎ তেলিয়ামুড়া শহরের প্রাণ কেন্দ্র বলে পরিচিত অম্পি চৌমুহনীর মত ব্যস্ততম ত্রি-মুখী রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে । এই বিষয়ে নামকাওয়াস্তে তেলিয়ামুড়ার ট্রাফিক দপ্তরকে বলা হলে তারা পুরোপুরি এক সময় বলে দেন যে এই ট্রাফিক সিগন্যাল বিষয়টা তেলিয়ামুড়া পুর পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে । অন্য দিকে তেলিয়ামুড়া পুর পরিষদের কাছে গেলে তারা সপাট বলে দেন এইটা ট্রাফিক সংক্রান্ত বিষয় । এইটা সম্পূর্ণ রূপে দেখার দায়িত্ব রয়েছে তেলিয়ামুড়া ট্রাফিক বিভাগের । অর্থাৎ এই ঠেলা ঠেলির ঘরের জেরে আজ শেষ পর্যন্ত চোখের সামনে দেখতে দেখতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ চলেই গেল এক বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মহিলার । যা মূলতঃই হৃদয় বিদারক । শুধু তাই নয় বলাই বাহুল্য, বিগত দিনে তেলিয়ামুড়াতে ট্রাফিক পুলিশের DSP হিসেবে বিক্রমজিৎ শুক্ল দাস থাকাকালীন ট্রাফিক ব্যবস্থার যতোটা সচল ছিল আজ পর্যন্ত সুতপা দেব ট্রাফিক পুলিশের DSP হওয়ার পর থেকে তেলিয়ামুড়ায় ট্রাফিক ব্যাবস্থা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেঁকেছে । যা মূলতঃই কঙ্কালসার স্বরূপ । শুধু তাই নয় আরও একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে তেলিয়ামুড়ার ট্রাফিক বিভাগের বিরুদ্ধে । তেলিয়ামুড়ার ট্রাফিক দপ্তরের কর্মীরা হাওয়াই বাড়ির নাকা পয়েন্ট এলাকায় গরুর গাড়ি সহ বিভিন্ন গাড়ি থেকে দিনভর তুল্লা আদায়ে এতোটাই মগ্ন হয়ে পড়ে যে তেলিয়ামুড়া শহড় জুড়ে যে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিতান্তই ভেঙ্গে পড়েছে সেই দিকে তাদের কোন হুঁশ নেই । সে যাই হউক এখন তেলিয়ামুড়ার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন সচেতন মহলের শুধু একটাই আওয়াজ অনতি বিলম্বে তেলিয়ামুড়া শহরের ট্রাফিক বাবুদের শীত ঘুম ভেঙ্গে আবারও যাত্রী সাধারণ সহ যান চালকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে গোটা তেলিয়ামুড়া শহর জুড়ে ট্রাফিক বিধি লাঘু হউক ।
Leave a Comment