জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- রাজ্যে বিদ্যুৎ বিল প্রদানে আরও স্বচ্ছতা আনতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের অফিস ও বাসভবনসহ, রাজ্যের ২,৭০০ জন বিদ্যুৎ নিগম কর্মচারীর বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে বলে মঙ্গলবার জানান বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি জানান, রাজ্যে বর্তমানে মোট ১০.২৬ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন, যার মধ্যে ৯০,০০০ জন ইতিমধ্যেই স্মার্ট মিটার গ্রহণ করেছেন।

তিনি আরো বলেন যে আজ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার বাসভবন ও দপ্তরে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মন্ত্রীর বাসভবন ও সমস্ত সরকারি দপ্তরে মিটার বসানো হবে। বিদ্যুৎ নিগম কর্মীদের বাড়িতেও এক সপ্তাহের মধ্যে মিটার বসানো সম্পন্ন হবে। স্মার্ট মিটার পর্যবেক্ষণের জন্য দুটি নতুন অফিস খোলা হবে, যেখান থেকে গোটা রাজ্যের স্মার্ট মিটারগুলি নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।
মন্ত্রী বলেন , এই মিটারগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং গ্রাহক-বান্ধব এবং অতিরিক্ত বিলের সম্ভাবনা নেই, বরং গ্রাহকরা নিজেরা তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হবেন। ভারত সরকার ও ত্রিপুরা সরকারের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের সম্মানীয় গ্রাহকদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১১ কেভি ফিডার, ট্রান্সফর্মার ও স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে।
মন্ত্রী স্মার্ট মিটারের সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করে বলেন এতে মিটারের সঠিক রিডিং অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল তৈরি হবে, গ্রাহকরা যতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন, ততটুকুরই বিল পরিশোধ করবেন, মিটার রিডার বাড়িতে এসে বিল তোলার ঝামেলা থাকবে না, দরজা বন্ধ থাকায় বিল না পাওয়ার সমস্যাও থাকবে না, গ্রাহকরা মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে প্রতিদিনের বিদ্যুৎ খরচ মনিটর করতে পারবেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ দপ্তরে সতর্কবার্তা পৌঁছবে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।”
তিনি আরও বলেন গ্রাহকরা তাদের মাসিক বাজেট অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। পাশাপাশি, স্মার্ট মিটার থাকলে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আলাদা নেট মিটার বসানোর প্রয়োজন নেই, ফলে প্রায় ৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে।
পাশাপাশি মন্ত্রী আরো জানান স্মার্ট মিটার স্থাপন সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রান্সফরমারগুলিতেও স্মার্ট মিটার বসানো হবে, যাতে ঐ এলাকার গ্রাহকেরা মোট কতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন, তা লোড অ্যাসেস করা যায়। এর ভিত্তিতে নিগমের এন ও এম সি রুম থেকে মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর বা বিদ্যমান ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন আগরতলা শহরে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার বসানোর জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডি পি আর ) তৈরির টেন্ডার ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ডি পি আর তৈরি হবে এবং অক্টোবর মাস থেকে কাজ শুরু হবে। আগরতলা পৌর নিগম এলাকার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পরবর্তী পর্যায়ে খুমুলুং, উদয়পুর ও ধর্মনগর এলাকাতেও ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে,” জানান বিদ্যুৎ মন্ত্রী।