Site icon janatar kalam

সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনায় মত্ত সারা রাজ্যবাসী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- মহাসমারোহে গোটা রাজ্যে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। বাড়িঘর কিংবা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বারোয়ারি ভাবে বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়েছে গণেশ পুজোর। উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা সবাই। সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও উদযাপিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। বিভিন্ন ক্লাব, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাড়ি ঘরেও পূজোর আনন্দে মাতোয়ারা প্রত্যেকে। রাজধানী আগরতলায় এ বছর পূজোর সংখ্যা বেড়ে গেছে অনেক। গণেশ চতুর্থী বা গণেশোৎসব হিন্দু দেবতা গণেশের বাৎসরিক পূজা-উৎসব। শিব ও পার্বতী পুত্র গজানন গণেশ হিন্দুদের বুদ্ধি, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের সর্বোচ্চ দেবতা। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন এই দিন গণেশ তার ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন। সংস্কৃত, কন্নড়, তামিল ও তেলুগু ভাষায় এই উৎসব বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি নামেও পরিচিত। কোঙ্কণী ভাষায় এই উৎসবের নাম চবথ । অন্যদিকে নেপালি ভাষায় এই উৎসবকে বলে চথা ।সিদ্ধিদাতা গণেশের জন্মোৎসব রূপে পালিত হয় এই উৎসব। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গণেশের পূজা বিধেয়। দশদিনব্যাপী গণেশোৎসবের সমাপ্তি হয় অনন্ত চতুর্দশীর দিন। ভাদ্রপদ শুক্লপক্ষ চতুর্থী মধ্যাহ্নব্যাপিনী পূর্বাবিদ্ধ – এই পূজার প্রশস্ত সময়। চতুর্থী দুই দিনে পড়লে পূর্বদিনে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এমনকি দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নের সম্পূর্ণ সময়ে চতুর্থী বিদ্যমান হলেও পূর্বদিন মধ্যাহ্নে এক ঘটিকার জন্যও যদি চতুর্থী বিদ্যমান থাকে তবে পূর্বদিনেই গণেশ পূজা হয়।গণেশ পূজা ভারতের সর্বত্র অনুষ্ঠিত হলেও এই উৎসব মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরল, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও গোয়া রাজ্যে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয়। ভারতের বাইরে নেপালে এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। শ্রীলঙ্কায় তামিল হিন্দুরাও এই উৎসব পালন করে থাকেন।কথিত আছে, সমস্ত শুভ কাজের শুরু শ্রী গণেশের নাম নিয়ে করলে তা সফল হয়। গণেশ পুজো বাদ দিয়ে কোনও পুজোই সম্পূর্ণ হয় না। দেবতাদের মধ্যে তাঁকেই প্রথম পূজ্য বলে গণ্য করা হয়। গণেশের প্রায় ১০৮টি নাম আছে। এর মধ্যে গণপতি, গজানন, বিনায়ক এবং বিঘ্নরাজ এগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, গণেশ হলেন সমৃদ্ধির প্রতীক। তাই তাঁর আর এক নাম হল সিদ্ধিদাতা গণেশ। পুরাণ অনুসারে, দেবী পার্বতী গণেশের সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাঁকে পার্বতীর দরজা পাহারা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। শিব ফিরে এসে পার্বতীর ঘরে ঢুকতে গেলে গণেশ তাঁকে বাধা দেন। একটি ছোট ছেলের এই আস্পর্ধা দেখে শিব রেগে যান। শিবের সঙ্গে গণেশের যুদ্ধও শুরু হয়। তখন রাগের মাথায় শিব গণেশের মাথা কেটে ফেলেন। গণেশকে মুণ্ডহীন দেহ দেখে পার্বতী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে বলেন শিবকে। শিব তখন অন্য দেবতাদের নির্দেশ দেন উত্তর দিকে গিয়ে যার মাথা আগে দেখতে পাবে সেই মাথাই কেটে নিয়ে আসতে। দেবতারা প্রথমেই একটি হাতি পেয়ে তারই মাথা নিয়ে আসে। সেই মাথাটিই গণেশের দেহে বসিয়ে দেন শিব। এই পুজোর বিশেষ খাদ্য: গণেশ যে খেতে ভালোবাসেন তা সকলেরই জানা। বিশেষ করে লাড্ডু আর মোদক তাঁর অত্যন্ত প্রিয়। মোদক হল চালের গুঁড়ো দিয়ে নারকেলের পুর দিয়ে তৈরি বিশেষ মিষ্টি। গণেশ পুজোর ঠিক আগে মিষ্টির দোকানে এই মোদকের নানান বৈচিত্র্য দেখতে পাওয়া যায়।

 

 

 

Exit mobile version