জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :-ক্ষুদিরাম বসু ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের অব্যবস্থা ও গাফিলতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। অভিযোগ, বিদ্যালয়ের অবহেলার জেরেই দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু দ্বীপান্বিতা পালের অকালে মৃত্যু ঘটেছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবক মহলেও।
৯ নভেম্বর স্কুলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দাবি, সেই অনুষ্ঠানে প্রবল রোদের মধ্যে শিশুদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ছোট্ট দ্বীপান্বিতা অসুস্থ বোধ করে শিক্ষিকাকে জানালেও তার অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লাস–টু’র ওই ছাত্রী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, সে সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে এবং শরীরের একটি অংশ প্যারালাইসিস হয়ে গেছে।
দীর্ঘ টানা চিকিৎসার পরও অবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার মৃত্যু হয় মাত্র সাত বছরের দ্বীপান্বিতার। এই নির্মম পরিণতি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহল থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরে শোক ও ক্ষোভ উভয়ই দেখা দিয়েছে। শিশুটির পরিবারের পাশে ছুটে গেছেন প্রদেশ বিজেপি নেতৃত্ব, মহিলা কংগ্রেস নেত্রীরা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকও।
শনিবার মৃত শিশুটির বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা। তিনি দ্বীপান্বিতার অকাল মৃত্যুকে “অত্যন্ত দুঃখজনক ও শোকাবহ ঘটনা” বলে ব্যাখ্যা করেন এবং পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মুখ্যমন্ত্রী জানান, শিশুটি জিবি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁর দফতর চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিল, কিন্তু সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও ঘোষণা করেন যে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য জেলা শাসক ও শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি এই ভয়াবহ সময়ে রাজ্য সরকার পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
দ্বীপান্বিতার মৃত্যু শুধু এক পরিবারের নয়—স্কুলে শিশুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল গোটা সমাজের সামনে।

