জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- রাজ্যে একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চিন্তা ভাবনা করছে রাজ্য সরকার। শীঘ্রই এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। কেননা রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা উন্নয়নই সরকার সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে চলেছে। বললেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: মানিক সাহা। ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। এখন আর মানুষ আগের মত বহির রাজ্যে চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি করতে হয় না। বর্তমানে দু-দুটি মেডিকেল কলেজে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি ধলাই জেলাতে পিপিপি মডেলে নতুন মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলা হবে। ডেন্টাল কলেজ চালু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য অনুসারে রাজ্যে আয়ুস মিশন গঠন করা হয়েছে। এই মিশনের মাধ্যমে আয়ুর্বেদিক, যোগা, ইউনানী, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়ন ঘটে চলেছে। প্রতিটি জেলা, মহকুমা, কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, এমনকি সাব সেন্টারগুলিতেও চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকারের লক্ষ্য রয়েছে সবকটি চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়নের মাধ্যমে রাজ্যে নতুন করে একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার। কেননা রাজ্য সরকার চিকিৎসা পরিষেবাটাকে রাজনৈতিক মুক্ত করতে চাইছে। চিকিৎসকদের মধ্যে কোন রাজনীতি থাকবে না।বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত স্টেট লেভেল ওরিয়েন্টেশন অফ আয়ুষ সি এইচ ও এস অন হোমিওপ্যাথিক হেলথ কেয়ার ফর মাদার এন্ড চাইল্ড বিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কথাগুলি তুলে ধরলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় চিকিৎসা পরিষেবাতেও রাজনৈতিক দলাদলি হত, চিকিৎসকদেরকেও রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত করা হতো। বর্তমানে সেটা নেই, রক্তের যেমন কোন ধর্ম নেই, জলের যেমন কোন ধর্ম নেই তেমনি চিকিৎসকদেরও আমরা কোন রাজনৈতিক তকমা দিতে চাই না। মুখ্যমন্ত্রী এদিন অত্যন্ত আক্ষেপের সুরে বলেন, একটা সময় ছিল চিকিৎসক নার্স কিংবা আশা কর্মীদের পুরস্কৃত করার সময়ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হতো, আমার জীবনে অনেক বড় বড় অপারেশন সাকসেস হয়েছি, কিন্তু কই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য আমি তো কোন পুরস্কার পাইনি। আমরা চাইছি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গত ৩৫ বছর রাজ্যটাকে একটা নাস্তিক পরিবেশে আবদ্ধ করে রেখেছিল, আমরা সেটাকে আস্তিক পরিবেশে পরিণত করেছি। কেননা যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। ঈশ্বরকে ছাড়া কেউ বাঁচতে পারবে না। সুতরাং ঈশ্বরকে মেনেই আমাদের কাজ করতে হবে। এদিনের অনুষ্ঠানে ২০২২ ২৩ অর্থবছরে ১০০ শতাংশ পূর্ণ টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় উত্তর ত্রিপুরা, গোমতী এবং ধোলাই জেলাকে সম্মানিত করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য কর্মসূচি ও চিকিৎসা পরিষেবার জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতি গুলিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এদিন দুজন আশা কর্মী এবং দুজন আশা ফ্যাসিলিটেটরদের মুখ্যমন্ত্রী শাড়ি এবং পাঁচরা প্রদান করেছেন।সেইসঙ্গে শিশুর ওজন মাপার যন্ত্র ও বেগ একজন আশা কর্মীকে প্রদান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে এই জাতীয় পুরস্কার পেয়ে দারুন খুশি আশা কর্মীরা। সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে এ জাতীয় পুরস্কারের উচ্চ প্রশংসা করেছেন এক আশা কর্মী মল্লিকা দেববর্মা। এ দিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব শুভাশিস দাস, অধিকর্তা শুভাশিস দেববর্মা, স্বাস্থ্য সচিব ডক্টর দেবাশীষ বাসু , প্রমুখ।