Site icon janatar kalam

রাজ্যে গণতন্ত্র প্রসারের ক্ষেত্রে জুলাই মাসের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- গণতন্ত্রের এক পবিত্র পীঠস্থান হলো বিধানসভা। রাজ্যের জনগণের সুখ সমৃদ্ধি ও সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য বিধানসভায় আলোচনা করা হয় এবং রাজ্যবাসীর কল্যাণে বিভিন্ন আইন এই বিধানসভাতে প্রণীত হয়। জনপ্রতিনিধিদের জন্য বিধানসভা একটি মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিধানসভা মানেই সব কিছুর বিধান। আজ বিধানসভার লবিতে ‘ঐতিহাসিক জুলাই: ত্রিপুরা বিধানসভার পদচিহ্ন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা ছিল ‘স্মৃতির পথ বেয়ে সম্মান, দায়বদ্ধতা ও গৌরবের যাত্রা’।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৩ সালের ১ জুলাই ত্রিপুরা বিধানসভা গঠিত হয়েছিল। ২০১১ সালের ২২ জুলাই উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ থেকে ত্রিপুরা বিধানসভা বর্তমান নতুন বিধানসভা ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছিল। রাজ্যে গণতন্ত্র প্রসারের ক্ষেত্রে জুলাই মাসের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের টি.পি.এস.সি, ভবনে প্রথম বিধানসভা ছিল। তারপর বিধানসভা উজ্জয়ন্ত প্রাসাদে স্থানান্তরিত হয়। সেক্ষেত্রে এই বছরের জুলাই মাসে ত্রিপুরা বিধানসভার ৬২তম গৌরবময় বছর। বিধানসভার সম্মান রক্ষার্থে ট্রেজারি ও বিরোধী সকল সদস্যদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার প্রাক্তন সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন বলেন, ঈশ্বর ও জনগণের আশীর্বাদে জনপ্রতিনিধিগণ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হন। পবিত্র বিধানসভায় জনকল্যাণে নানা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিধানসভা হল প্রত্যেক বিধায়কদের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসের একটা কেন্দ্র। কৃষি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, আজকের দিনটির সাথে জড়িয়ে আছে রাজ্যের গণতান্ত্রিক ইতিহাস। রাজ্যের ৩০ জন বিধায়ক নিয়ে শুরু হয়েছিল রাজ্যের প্রথম বিধানসভা।

বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা বলেন, আজকের দিনটির গুরুত্ব অনেক। জনকল্যাণে বিভিন্ন আইন তৈরির স্থান হল বিধানসভা। অনুষ্ঠানে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ভারতবর্ষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও দেশেই এত বৃহৎ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। এই জুলাই মাসেই জনকল্যাণে রাজ্যের বিধানসভার যাত্রা শুরু হয়েছিল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায় সহ বিধায়কগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি কেন্দ্র করে বিধানসভার বিভিন্ন স্থানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন সহ অন্যান্য অতিথিগণ বিধানসভা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন প্রজাতির আমের চারা রোপণ করেন। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উপলক্ষ্যে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে ২৫০টি নানা প্রজাতির আমের চারা বিতরণ করা হয়।

বৃক্ষরোপণের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, প্রকৃতি ছাড়া মানব সভ্যতা টিকে থাকা সম্ভব নয়। জনপ্রতিনিধি সহ প্রত্যেক মানুষের উচিত বন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা। ‘এক পেড় মা কে নাম’ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে নিজের মা’র নামে একটি গাছ রোপণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই কর্মসূচিতে এক বছরে ১ লক্ষ ৪২ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, একটি পরিণত গাছ বছরে ২৬০ পাউন্ড অক্সিজেন সরবরাহ করে ও ৪৮ পাউন্ড কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৃক্ষরোপণ প্রত্যেক মানুষের একটা প্রধান কর্তব্য হিসাবে গণ্য করতে হবে।

Exit mobile version