জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুরু হওয়া শারদীয়া দুর্গা উৎসবের আরো একটি দিন অতিবাহিত। তিথি মেনে এবার মন্ডপে মন্ডপে সম্পন্ন হয় মহা অষ্টমী পূজা। দূর্গা পূজার মহা অষ্টমী তিথি মহামায়ার খুব প্রিয় তিথি। আদি শক্তি মহামায়া এর প্রথম পুজো করেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। অষ্টমী তিথি হল অসুর বিনাশী শুদ্ধসত্তার আবির্ভাব তিথি। অষ্টমী তিথিতে দেবী মহালক্ষী রূপা বৈষ্ণবী শক্তি। এই তিথিতেই নাকি দেবী দুহাত বর দেন ভক্তদের। তাই শ্রেষ্ঠ উপাচার নিবেদিত হয় সেদিন। পদ্ম জবা অপরাজিতা বেলপাতা কত রকমের ফুলমালায় দেবীকে সাজানো হয়। অষ্টমী পুজো হলো দুর্গোৎসবের পাঁচটি দিনের মধ্যমণি। আর এই দিনেই অনুষ্ঠিত হয় কুমারী পূজা। মুনি ঋষিরা কুমারী পুজোর মাধ্যমেই প্রকৃতিকে পুজো করতেন। প্রকৃতি মানে নারী। সেই প্রকৃতিরই আরেক রূপ কুমারীদের মধ্যে দেখতে পেতেন তারা। তারা বিশ্বাস করতেন মানুষের মধ্যেই রয়েছে ঈশ্বরের প্রভাব। কারণ মানুষ চৈতন্য যুক্ত। আর যাদের সৎ মন, কুলষতামুক্ত, তাদের মধ্যে আবার ঈশ্বরের প্রকাশ প্রকট। কুমারীদের মধ্যে এই গুণগুলি থাকে মনে করি তাদের বেছে নেওয়া হয় এই পুজোর দেবী হিসেবে। পুজো করা হয় অষ্টমী তিথিতে। শাস্ত্র অনুসারে সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের অজাত পুষ্প সুলক্ষনা কুমারীকে পুজোর উল্লেখ রয়েছে। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যা কেও পুজো করার বিধান রয়েছে। বয়স অনুযায়ী কুমারীদের বিভিন্ন নামেও অভিহিত করা হয়। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে মহা অষ্টমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হলো কুমারী পূজা। রবিবার আগরতলা ধলেশ্বর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, বাধারঘাট মাতৃপল্লী এলাকার বাউল বাড়ি, জনকল্যাণ সমিতি আয়োজিত পুজো মন্ডপে নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন হয় এই পুজো। আগরতলা কৃষ্ণনগর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য ও বর্ণিতা ভট্টাচার্যের নয় বছরের কন্যা সন্তান শ্রীকৃষ্ণ মিশন স্কুলের ছাত্রী বিবিধা ভট্টাচার্য বাউল বাড়ির দুর্গাপূজায় কুমারী রূপে পুজিত হলেন। অন্যদিকে আবার উদয়পুরের কাঁকরাবনের নয় বছরের মৌসুমী চক্রবর্তী একই রূপে পূজিত হলেন জনকল্যাণ সমিতির পূজা মন্ডপে। আর এই পুজোকে ঘিরে পূজো মন্ডপ গুলিতে লক্ষ্য করা গেল পূন্যার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।