Site icon janatar kalam

মায়ের সাক্ষীতে খুনি ছেলেকে দোষি সাব্যস্ত করে সাজা প্রদান করল আদালত

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- মায়ের সাক্ষীর উপর ভিত্তি করে খুনি ছেলেকে দোষি সাব্যস্ত করে সাজা প্রদান করল আদালত। ২০২০ সালের বিশালগড় পুর পরিষদের সাফাই কর্মী কৃষ্ণা দাস হত্যাকাণ্ডের মূল দুই অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বিশালগড় স্থিত সিপাহীজলা জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। ঘটনার বিবরনে জানা যায় বিশালগড় মহকুমা শাসকের অফিস সংলগ্ন এলাকার পুর পরিষদের সাফাই কর্মী কৃষ্ণা দাস ২০২০ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন।পরিবারের লোকেরা বহু খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনও হদিস পাননি। পরে ২৭ এপ্রিল এলাকাবাসী কৃষ্ণা দাসের বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত একটি জলের কূপে তার পঁচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রথমে স্থানীয়রা সন্দেহবসত মৃতার প্রতিবেশী গোপাল দাসের পুত্র সুমন দাসকে আটক করে উত্তম মধ্যম দিলে সে কৃষ্ণা দাসকে হত্যার ঘটনাটি স্বীকার করে। পরে তার সহযোগী উত্তর চড়িলামের রাখাল দাসের ছেলে চন্দন দাসের নামও উঠে আসে। উভয়েই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। অভিযুক্তরা জানায়, ২৪ এপ্রিল রাতে পুর পরিষদের সাফাই কর্মী কৃষ্ণা দাসকে সুমন এবং চন্দন মিলে সুমন দাসের ঘরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে রাতের আঁধারে কৃষ্ণার মৃতদেহটি তার বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জলের কূপের মধ্যে ফেলে দেয়। মৃতা কৃষ্ণার পুত্রবধূ সুমিত্রা দাস ঘটনার দিন বিশালগড় থানায় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। বিশালগড় থানার পুলিশ উক্ত ঘটনায় একটি মামলা নথিভুক্ত করে। অভিযোগ হাতে পেয়ে মামলা তদন্তকারী অফিসার তৎকালীন বিশালগড় থানার SI রাজু ভৌমিক ঘটনার দিনই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলার তদন্ত কার্য শুরু হয়। দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ দুই অভিযুক্তকে জেলে রেখেই মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়। সিপাহীজলা জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জর্জ দেবাশীষ কর ২৫ জনের সাক্ষ্যবাক্য শুনে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে। ৩০২ ধারায় হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০১ ধারায় প্রমান লোপাটের চেষ্টার দায়ে ৫০০০ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি প্রদান করে। উল্লেখ্য, এই মামলার ২৫ জন সাক্ষ্যির মধ্যে অভিযুক্ত সুমন দাসের মা ললিতা দাস আদালতে দাড়িয়ে নিজের ছেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যি দেন। যা ছিল এই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেয়। এই মামলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী গৌতম গীরি।

 

 

 

Exit mobile version