জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- প্ সমীরঞ্জন বর্মনের কারণেই কমিউনিস্টরা ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছে । এই পিতা পুত্রের নেতৃত্বে পরিচালিত কংগ্রেস এবার প্রকাশ্যেই সিপিএমের সাথে একমঞ্চে এসেছে । এই কারণেই এত বছর ত্রিপুরা থেকে কমিউনিস্টদের সরানো যায়নি। নলছড়ে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এইভাবেই বাক্যবানে বর্মনদের নিশানা করলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যসভা সাংসদ তথা পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব । এদিন প্রথমেই একটি রোড শো, সোনামুড়া শান্তি পল্লী থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত পরিক্রমা করে। এদিন নলছরে ৩৭৭ পরিবারের ১৩২৮ জন বিপ্লব কুমার দেবের হাত ধরে বিজেপি দলে যোগদান করেন।
তিনি বলেন কমিউনিস্ট কখনোই ত্রিপুরায় ক্ষমতার মসনদে বসার সুযোগ পেতো না, যদি বর্মনরা তাদেরকে মদত না দিতো। তারাই সংকীর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে সেই সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের সাথে কমিউনিস্টদের পর্দার আড়ালে সখ্যতা এবার রাজ্যের মানুষের কাছে জলের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাদের সাথে থাকতে থাকতে এখন কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহার মধ্যেও কমিউনিস্টের জিন প্রবেশ করেছে। রাজ্যের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পথে তাদের সমিচিন জবাব দেবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
বিপ্লব কুমার দেব আরো বলেন, একমাত্র তিপ্রা মথার কারণেই সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বিধায়ক হিসেবে জয়লাভ করতে পেরেছিলেন। বিরোধী দলনেতার পদও মথার কল্যানেই পেছেন। মথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ যতদিন তাদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রেখেছে ততদিন প্রদ্যুত বাবু সম্পর্কে তারা ছিলেন প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আর তাদের প্রকৃত রূপ বুঝতে পেরে রাজ্যের জনজাতিদের স্বার্থে বিজেপির সঙ্গে আসতেই প্রদ্যুৎ কিশোর এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে দোষারোপের নুংরা রাজনীতি শুরু করেছে কমিউনিস্ট নেতারা। যে কমিউনিস্ট নেতারা পূর্ব ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মাকে বহিরাগত বলে আক্রমণ করছেন, তাদের নিজেদের দল ও নীতি আদর্শ সবই বহিরাগত। চীন থেকে আমদানি করা। বিগত ২৫ বছরে রাজ্যের মানুষের আর্থ সামাজিক জীবনমান বিকাশে সম্পূর্ণ ব্যর্থ কমিউনিস্টরা। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল মানুষকে বঞ্চিত, অনগ্রসর রেখে, পার্টি অফিস এবং পার্টির বিকাশ করা। সার্বিক বিকাশের প্রশ্নে ত্রিপুরাকে উপেক্ষিত রেখে গোটা দেশে স্বর্ণ রাজ্যের মিথ্যা স্বপ্ন বিলিয়েছে তারা।
তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস ও কমিউনিস্টদের রাজনৈতিক হিংসার কারণে বীরচন্দ্র মনু সহ অন্যান্য জাগায় বহু মা তার সন্তান হারিয়েছে। সমস্ত খুনের সঙ্গে আপোষ করে শুধুমাত্রই সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থের এক অশুভ জোট করেছে তারা। ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা কেড়ে নিয়েছিল কত জীবন। কত মানুষকে বাড়িছাড়া করে রেখেছিল। যারা অবৈধভাবে ১০৩২৩ জন শিক্ষককে চাকরি দিয়েছে এবং এই চাকরি বাতিলের জন্য যে দলের নেতা মামলা করিয়ে উদ্যোগ নিয়েছিল তারা সবাই এখন এক মঞ্চে। কিন্তু ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে হাজার হাজার মানুষের।
বিধানসভা নির্বাচনের ভোটের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে লোকসভায় বেশি মাত্রায় গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে বিপ্লব কুমার দেব বলেন , রাজ্যে নির্বাচিত সরকার শুধুমাত্র রাজ্যের কল্যাণে কাজ করে । কিন্তু কেন্দ্রে কারা ক্ষমতায় থাকবে এবং প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন তার উপর সমগ্র দেশের আগামী দিনের ভবিষৎ ও দিশা নির্ভর করে।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদি দেশকে বিশ্ব নেতার আসনে তুলে ধরেছে। জাতীয় অর্থনীতির উর্ধ্বগতি সহ অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত গুচ্ছ প্রকল্পের সহায়তায় পাল্টে গেছে সবার জীবনযাত্রা । প্রবাহমান এই উন্নয়ন যাত্রাকে বিঘ্নিত করতে জাতের রাজনীতি শুরু করেছে বিরোধীরা । ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরাতেও প্রচার করা হয়েছিল বিজেপি ক্ষমতায় এলে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন শুরু হবে । কিন্তু এ ধরনের একটি দৃষ্টান্তও নেই।উপরন্তু শিক্ষা সরকারি চাকরি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা সম্মানের সাথে এগিয়ে চলেছে। তিন তালাক সহ সংখ্যালঘু মুসলিমদের কল্যাণে একাধিক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সবার অধিকার সুরক্ষার জন্য কাজ করেছে কেন্দ্র রাজ্য সরকার । ত্রিপুরায় সামাজিক ভাতার ৩০০ থেকে ৫০০ বেশি করতে পারেনি কমিউনিস্টরা। ২০১৮ সালের পর এখনো পর্যন্ত এই অল্প সময়ের মধ্যেই সামাজিক ভাতা হয়ে গেছে দু হাজার টাকা। যাদের নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষৎ অন্ধকারে তারাই রাজ্যের মানুষকে দিশা দেখানোর কথা বলে বিভ্রান্ত করতে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।