বকেয়া দাবিতে আত্মসমর্পণকারী উগ্রপন্থীর সড়ক অবরোধ! সরকারের দাবি পূরণের আশ্বাস! প্রত্যাহার বনধ
janatar kalam
Oplus_131072
জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ট্রিপল ইঞ্জিনের দৌলতে এই বার প্রকাশ্যে রাস্তায় নেমে বকেয়া দাবি আদায়ের দাবিতে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে বিগত দিনে ত্রিপুরা রাজ্যের বুকে দফায় দফায় আত্মসমর্পণকারী উগ্রপন্থী অর্থাৎ (চরমপন্থী) গোষ্ঠী । ঘটনা আজ মঙ্গলবার খোয়াই জেলা ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সংযোগস্থল বড়মুড়া পাহাড়ের মধ্যে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বিগত ৮০ ও ৯০ দশকে ত্রিপুরা রাজ্যের বুকে দিকে উগ্রপন্থীর চরম অত্যাচার কায়েম করে রেখেছিল একাংশ বৈরী গোষ্ঠী। যার দরুন তৎকালীন সময়ে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছিল শুধু তাই নয় তৎকালীন সময়ে গ্রাম থেকে শহর একাংশ এলাকা আগুনের লেলিহান শিখায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সরকারের তরফে শেষ ২০০২ সালে জাতিগত দাঙ্গার পর বৈরী গুষ্টির সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবনে ফিরে আসার জন্য আহ্বান করে পাশাপাশি সরকারি চাকুরি সহ সরকারের তরফে শীঘ্রই অন্ন বস্ত্র বাসস্থান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেলে তারা বিভিন্ন বৈরী গোষ্ঠীর সঙ্গ ছেড়ে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
কিন্তু আজ দীর্ঘ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের দাবি সরকার কথা দিয়ে কথা রাখে নি । সরকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। আর সরকারকে শীঘ্রই প্রতিশ্রুতি পূরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই আজ তারা ফের একবার বড়মুড়া পাহাড়ে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বসে । দীর্ঘ ৮ ঘন্টা চলে জাতীয় সড়ক অবরোধ । স্তব্ধ হয়ে পড়ে জন-জীবন । ঘটনাস্থলে দফায় দফায় বেশ কয়েকবার মহকুমা শাসক ও পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হলেও বিগত দিনের প্রতিশ্রুতি পূরণের আশ্বাস না পাওয়া অব্ধি বৈরী গোষ্ঠী তাদের অবরোধ চালিয়ে যেতে থাকে।
তাদের জাতীয় সড়ক অবরোধের পেছনে রয়েছে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান সরকারি চাকুরি ও রোমান স্ক্রিপ্ট সহ মোট ২১ দফা দাবি । মঙ্গলবারের এই অবরোধে থেকে আত্মসমর্পণকারী বৈরীদের সংগঠনের নেতা ড্যানিয়েল বরাক জানান – অনেক হয়েছে! আর কাল বিলম্ব নয়! শীঘ্রই অবিলম্বে তাদের এই ২১ দফা দাবি গুলি পূরণ করা না হলে দাবি অনাদায়ে আগামী দিনে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করবে।
এই আন্দোলন প্রসঙ্গে আত্মসমর্পণকারী বৈরী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব ড্যানিয়েল বরাক আরও জানান- বর্তমানে আত্মসমর্পণকারী বৈরীদের সাথে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল । কিন্তু এই চুক্তি অনুসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও আত্মসমর্পণকারী বৈরীদের মামলাগুলো আজকের দিনেও তুলে নেওয়া হচ্ছে না । শুধু তাই নয়, আত্মসমর্পণকারী বৈরীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র গুলিতেও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে না।
পাশাপাশি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের কোন পরিকাঠামোই গড়ে তোলা হয় নি। যার দরুন সরকারের প্রতি একরাশ ক্ষোভ নিয়ে আজকে তারা এই জাতীয় সড়ক অবরোধে করতে বাধ্য হয়েছে । আর এই বনধে আজকে জরুরী পরিষেবার গাড়ি গুলিকে ছাড় দেওয়া হলেও জাতির মেরুদন্ড শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোন ছাড় দেওয়া হয় নি । যার দরুন আজকে থেকে শুরু হওয়া অনেক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের স্বল্প শিক্ষক-শিক্ষিকার দরুন অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
এই দিকে সকাল থেকেই আজকের এই অবরোধকে ঘিরে গোটা বড়মুড়া পাহাড় চত্বর যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রূখতে বিশাল পুলিশি বেষ্টনী মোতায়েন করা হয়েছে । উপস্থিত ছিলেন জিরানীয়ার মহকুমা শাসক থেকে শুরু করে, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কমল কৃষ্ণ কলই সহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিরঞ্জীব । তবে আজকের এই অবরোধের ফলে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের দু-পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে অসংখ্য ছোট বড়ো যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়ি । দিন যতো সন্ধ্যায় ঘনাতে থাকে গাড়ির লাইন ততোই সুদীর্ঘ হতে থাকে।
অবশেষে দীর্ঘ ৮ ঘন্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ চলার পর আত্মসমর্পণকারী বৈরী গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা ড্যানিয়েল বরাকের নেতৃত্বে রাজধানী আগরতলার জেলা শাসক কার্যালয়ে অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে এক চূড়ান্ত বৈঠকের পর ফের একবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় শীঘ্রই তাদের বকেয়া দাবি পূরণ করবে সরকার । অতঃপর আত্মসমর্পণকারী বৈরী গোষ্ঠীর সংগঠন দুপুর ৩ টা নাগাদ জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত করে । তবে আজকের এই হঠাৎ আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে এই অবরোধের পেছনে ইতি মধ্যেই কোন ধরনের এক ইন্ধনের সূত্র খুঁজে পাচ্ছে একাংশ মহল!!