জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যা কেবল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করা হবে, কোনও তৃতীয় পক্ষের এতে কোনও ভূমিকা থাকবে না। মঙ্গলবার স্পষ্ট এই তথ্য জানিয়ে দিল ভারত সরকার। এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন যে পাকিস্তানকে অবৈধভাবে অধিকৃত কাশ্মীর (POK) দিয়ে দিতে হবে। যা ভারতের চিরকালীন নীতি, তাই বজায় থাকছে। এতে কোনও পরিবর্তন আসছে না।
বিদেশ মন্ত্রক আরও জানিয়েছে যে ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের ডিজিএমওদের মধ্যে আলোচনার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিছু টেকনিক্যাল কারণে হটলাইনের মাধ্যমে ভারতের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় পাকিস্তান একই দিন রাত ১২:৩৭ মিনিটে এই কথোপকথনের অনুরোধ জানায়।
ভারত অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছে যে পাকিস্তান বাধ্য হয়েই ফোন করে। কারণ ওইদিন সকালে ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের প্রধান বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুসারে, ‘ভারতীয় সামরিক বাহিনীর শক্তিই পাকিস্তানকে গুলিবর্ষণ এবং সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল।’
বিদেশ মন্ত্রক আরও স্পষ্ট করেছে যে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনার সময়ও ভারত একই বার্তা দিয়েছে যে ২২শে এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় কেবল নয়, দেশের উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসী পরিকাঠামোকে ধ্বংস করা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যদি গুলি চালায়, তাহলে ভারতীয় সেনাবাহিনীও পাল্টা জবাব দেবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পাকিস্তান যদি থামে, ভারতও থামবে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু হওয়ার সময় পাকিস্তানকেও একই বার্তা দেওয়া হয়েছিল, যা তারা সেই সময় উপেক্ষা করেছিল। পরে তাদের ফল ভুগতে হয়।
কাশ্মীর নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বক্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবারও বলে যে এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট এবং দৃঢ়। জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়। এই নীতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি। পাকিস্তানকে অবৈধভাবে দখলিকৃত ভারতীয় ভূখণ্ড (POK) খালি করতে হবে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেছেন যে ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত-মার্কিন নেতাদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে, কেবল সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত কোনও বিষয় উত্থাপিত হয়নি।
একইসঙ্গে ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের কথায়, ‘যে দেশ কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাসবাদকে শিল্পের মতো লালন পালন করে আসছে, যদি তারা মনে করে যে তারা এর পরিণতি থেকে বাঁচবে, তাহলে তারা নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে। ভারত যে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করেছে, সেগুলি কেবল ভারতীয় নাগরিকদেরই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে অনেক নিরীহ মানুষের মৃত্যুর জন্যও দায়ী ছিল। এখন একটি নতুন স্বাভাবিক অবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তান যত তাড়াতাড়ি এই নতুন ব্যবস্থাকে গ্রহণ করবে, ততই তাদের জন্য মঙ্গল।