জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :- জনজাতি শিক্ষার প্রসার ও সংস্কৃতির সংরক্ষণে ত্রিপুরা সরকার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল। আজ জম্পুইজলা মহকুমার প্রভাপুর ভিলেজে নবনির্মিত ৪৮০ আসন বিশিষ্ট একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সরকার কাজ করে চলেছে। উভয় সরকারই জনজাতি সম্প্রদায়কে যথাযথ সম্মান দিয়ে থাকে। সেই সম্মানের প্রতিফলন ঘটেছে দ্রৌপদী মুর্মুকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সন্তান যীষ্ণু দেববর্মাকে তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগের মাধ্যমে।”
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে জনজাতি সম্প্রদায়ের উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় প্রকল্প তারই একটি সফল উদাহরণ। কেন্দ্রীয় জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রকের আর্থিক অনুদানে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুর্বল ও পিছিয়ে পড়া জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যেই এই প্রকল্প চালু হয়েছে। সারা দেশে ইতোমধ্যে এই বিদ্যালয়গুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে।” বর্তমানে ত্রিপুরায় ২১টি একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে আজকের উদ্বোধনের পর সংখ্যা দাঁড়াল ১২টি।
তিনি আরও বলেন, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এখানে বিনামূল্যে আবাসিক সুবিধাসহ পড়াশোনার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি, ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরা এখন দেশের পূর্ণ স্বাক্ষর রাজ্যগুলির একটি। জনজাতি কল্যাণ ও শিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যে তিনটি ডিগ্রি কলেজে এস.টি. হোস্টেল চালু রয়েছে। ২০২৩ সালে হোস্টেল আবাসিকদের দৈনিক খরচ ৫৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে, যার ফলে প্রায় ৪০ হাজার ছাত্রছাত্রী উপকৃত হয়েছে।
এছাড়া প্রি-মেট্রিক স্কলারশিপ ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,০০০ টাকা করা হয়েছে, উচ্চশিক্ষার জন্যও একাধিক সুযোগ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ২৯টি নতুন হোস্টেল নির্মিত হয়েছে এবং ৫০টি হোস্টেলে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকা। জনজাতি কারুশিল্প, লোকসংগীত ও হস্তশিল্পের উন্নয়নে অতিরিক্ত ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, বিধায়ক মানব দেববর্মা, দপ্তরের সচিব ড. কে. শশীকুমার, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল এবং দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশিস দাস। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জম্পুইজলা বি.এ.সি-র চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা।