জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি:-জাতীয় সঙ্গীত *‘বন্দে মাতরম’*-এর ১৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত রাজ্যস্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ড. মাণিক সাহা ‘বন্দে মাতরম’-কে বর্ণনা করেন “জাতি গঠনের এক পবিত্র মন্ত্র” হিসেবে।
এই অনুষ্ঠানটির মধ্য দিয়েই সূচনা হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সারা দেশে শুরু হওয়া বছরব্যাপী উদযাপনের, যার লক্ষ্য জাতীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্য ও তাৎপর্যকে সম্মান জানানো। 
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “‘বন্দে মাতরম’-এর সমবেত সঙ্গীত শুনে আমি গভীর আবেগ ও গর্ব অনুভব করেছি।” তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুপ্রেরণামূলক বার্তা শোনেন এবং বলেন, “এই বার্তা নবপ্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের চেতনাকে আরও জাগিয়ে তুলবে।”
ড. সাহা *‘বন্দে মাতরম’*-এর ঐতিহাসিক যাত্রাপথের কথাও তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭০-এর দশকে গানটি রচনা করেন এবং তা প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর উপন্যাস *আনন্দমঠ*-এ ১৮৮২ সালে। গানটি ব্রিটিশ শাসনামলে নিষিদ্ধ থাকলেও, পরবর্তীতে স্বদেশি ও বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে প্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে এবং অবশেষে ১৯৫০ সালে এটি ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা লাভ করে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “‘বন্দে মাতরম’ মাতৃভূমিকে দেবীর রূপে প্রতিফলিত করে—যা ধর্ম, ভাষা ও প্রদেশের সীমা ছাড়িয়ে সকল ভারতবাসীর হৃদয়ে এক গভীর আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি করে।”
তিনি ঘোষণা করেন যে ত্রিপুরা জুড়ে এই বার্ষিক উদযাপন চলবে—রাজ্যের প্রতিটি জেলা, মহকুমা, ব্লক, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল ও কলেজে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হবে, যাতে বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা গানটির ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী সকল অংশগ্রহণকারীকে আহ্বান জানান, তাঁরা যেন তাঁদের অনুষ্ঠান, ছবি ও ভিডিও সরকারি প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করেন, যাতে দেশপ্রেমের অনুভূতি আরও ছড়িয়ে পড়ে।
শেষে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, “‘বন্দে মাতরম’-এর এই ঐতিহাসিক উদযাপন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের ‘বিকসিত ভারত’ গঠনে সকল নাগরিককে অনুপ্রাণিত করবে—এক ঐক্যবদ্ধ, গর্বিত ও অগ্রসর ভারতের পথে।”