জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকে মহিলাদের স্বশক্তিকরণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সর্বাগ্রে মহিলাদের সম্মান জানাতে হবে। ফটিকরায়ের নজরুল কলাকেন্দ্রে কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী সুধাংশু দাস। নজরুল কলাকেন্দ্রে অনুষ্ঠান শুরুর আগে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ফটিকরায় বাজার সহ বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
এবছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের মূল ভাবনা ‘সকল নারী ও মেয়েদের জন্য অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা’। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, মহিলাদের সম্মানার্থে এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজে মহিলারা যেভাবে অবদান রাখছে তাকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্যই আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, বিশ্বের যা কিছু সৃষ্টি তার অর্ধেক অবদান মহিলাদের। তিনি বলেন, মহিলাদের কথা বিবেচনা করেই নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছ ভারতের কর্মসূচি চালু করে। স্বচ্ছ ভারত মিশনে দেশের সরকার প্রায় ১১ কোটি পরিবারে পাকা শৌচালয় নির্মাণ করে দেয়। মহিলাদের কথা মাথায় রেখে উজ্জ্বলা যোজনায় বিনা পয়সায় রান্নার গ্যাস প্রদানের প্রকল্প চালু করে। তার রেশ ধরে আমাদের রাজ্যেও সরকার ২০১৮ সালের পর থেকে মহিলাদের আত্মমর্যাদা ও স্বশক্তিকরণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। রাজ্যে মহিলাদের নামে জমির রেজিস্ট্রেশন করলে ৩ শতাংশ কম রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়। রাজ্যে মহিলাদের ২টি টিএসআর ব্যাটেলিয়ন তৈরি করা হয়েছে। এখন রাজ্যে সব সরকারি চাকরির জন্য ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজ্যে বর্তমানে ৫২ হাজার ৬০০ স্বসহায়ক দল তৈরি করা হয়েছে। এই স্বসহায়ক দলে প্রায় ৫ লক্ষ ২৬ হাজার মহিলা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। মৎস্যসখী, ব্যাঙ্ক সখী, কৃষি সখীর মাধ্যমে বহু মহিলা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। বর্তমান সরকারের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কন্যা সন্তান ও মেয়েদের জন্য আরও দুটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এছাড়া পশুপালন, মৎস্য দপ্তরে কোনও কোনও প্রকল্পে উদ্যোগী মহিলাদের জন্য ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এর উদ্দেশ্যে মহিলাদের এগিয়ে যেতে উৎসাহ প্রদান করা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস বলেন, বর্তমান সরকার নারীদের আর্থিক বিকাশ, আত্মসম্মান রক্ষা ও স্বশক্তিকরণে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন মহকুমা শাসক এন এস চাকমা, আম্বেদকর মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. সুব্রত শর্মা, কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান শংকর দেব, সমাজসেবী নীলকান্ত সিনহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডিও ডা. সুদীপ ভৌমিক। অনুষ্ঠানের সভাপতি কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সুমতি দাস আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য কুমারঘাট ব্লক এলাকার কয়েকজন মহিলাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।