জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি :- ত্রিপুরা চা নিগমকে আর্থিকভাবে লাভজনক অবস্থায় ফেরাতে এবং রাজ্যে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। আজ সচিবালয়ে আয়োজিত নিগমের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী নিগমের অগ্রগতি ও সামগ্রিক কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন।
তিনি বলেন, ত্রিপুরার চা স্বাদ, গন্ধ এবং প্রাকৃতিক গুণে দেশের অন্যান্য চায়ের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। তাই চায়ের গুণমান আরও উন্নত করা, ব্র্যান্ডিং ও ব্যাপক প্রচার–প্রসারের মাধ্যমে বাজার বাড়ানোর উদ্যোগ জরুরি। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, যেসব রাজ্যে চা উৎপাদন হয় না, সেখানে ত্রিপুরার চা পৌঁছে দিতে পারলে নিগম আরও লাভবান হবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভোকাল ফর লোকাল আহ্বানকেও সামনে রেখে ত্রিপুরার চা শিল্পকে দেশে নিজের জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সভায় উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, নিগমের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ, মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী, অর্থ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত কুমার দাসসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
সভায় শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে নিগমের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিস্তারিত রিপোর্ট তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে—
২০২৪ সালে ত্রিপুরায় বার্ষিক চা উৎপাদন হয়েছে ৯০ লক্ষ কেজি।
রাজ্যে নিগমের অধীনে রয়েছে ৫টি চা বাগান, সমবায় পরিচালিত ১৩টি, এবং বেসরকারি মালিকানাধীন ৩৬টি বাগান।
ক্ষুদ্র চা চাষির সংখ্যা ২,৮০০ জন।
চা শ্রমিকদের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়। জানানো হয়েছে— চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১০৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০৪ টাকা করা হয়েছে। ব্রহ্মকুন্ড চা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের আধুনিকীকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাছমারা এস্টেটে ক্ষুদ্র চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।
এছাড়া রাজ্যে চা নিলাম কেন্দ্র চালুর প্রক্রিয়াও এগোচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, পরিকল্পিত উদ্যোগ ও সঠিক বিপণন কৌশলের মাধ্যমে ত্রিপুরার চা শিল্প আবারও লাভজনক অবস্থায় ফিরতে পারবে।

