বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ফিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- ক্রস বর্ডার আর্গেনাইজড ক্রাইমসঃ মূল্যায়ন ও আইনি সমাধান’ শীর্ষক আলোচনাচক্র। বর্তমান সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে কাজ করছে । মুখ্যমন্ত্রী
ড্রাগসের অপব্যবহার শুধুমাত্র আমাদের দেশেই নয় বর্তমানে সারা বিশ্বেই প্রধান সামাজিক উল্লেগের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের ছোট রাজ্য ত্রিপুরাও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তাতে সফলতাও এসেছে। আজ নরসিংগডস্থিত ত্রিপুরা জুডিশিয়াল একাডেমির অডিটোরিয়ামে ‘ক্রস বর্ডার অর্গেনাইজড ক্রাইমসঃ মূল্যায়ন ও আইনি সমাধান’ শীর্ষক আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। ত্রিপুরা গুডিশিয়াল একাডেমির উদ্যোগে এবং ত্রিপুরা হাইকোর্টের স্টপোষকতায় আয়োজিত এই আলোচনাসকে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস ও সঞ্চয় করোল, ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অপরেশ কুমার সিং সহ সিকিম হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, পঢ়িনা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং ঝড়খণ্ড, কোলকাতা গুয়াহাটি, মেঘালয় ও মনিপুর হাইকোর্টের বিচারপতিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা তিন দিক দিয়ে প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ঈমানা পর বেষ্টিত। ফলে আন্তর্জাতিক ড্রাগস ব্যবসায়ীরা সহজেই ত্রিপুরাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করছে। যা রাজ্যের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ড্রাগস পাচার ও ড্রাগসের অপব্যবহার একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। কারন এটি তরুন প্রজনোর ভবিষ্যতকে ধ্বংস করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও একটা চ্যালেঞ্জ তৈরী করেছে। ড্রাগস পাচার ব্যবসা বর্তমানে দেশের নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। অবৈধ ড্রাগস ব্যবসা সন্ত্রাসী ও দেশবিরোধীদের আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত রাজা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ফিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে কাজ করছে। রাজা পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয় সহযোগিতার ফলে নেশা বিরোধী অভিযানে সাফল্য আসছে৷ মুখ্যমন্ত্রী তথা সহকারে বলেন, ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত সারা রাজ্যে এনডিপিএস মামলায় ওয়াহিয়ার নথিবদ্ধ করা হয়েছে ১৫০৯টি, পুলিশ দ্বারা চার্জসিট গঠন করা হয়েছে ১,১৪৩টি, গ্রেপ্তার হয়েছে ২.১৩১ জন অপরস্ত্রী এবং ৩৩১টি মামলা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে গাজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১৬২০.২১ কুইন্টাল, কফসিরাজ ও ফেন্সিডিল বয়োপ্ত করা হয়েছে ৮ লক্ষ ২ হাজার ৮৮টি বোতল, ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২৩ লক্ষ ৭৫৮ হাজার ১১৯টি এবং হেরোইন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২৭৬১৩ কেজি। মানব পাচার রোধেও সরকার সতর্কতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত মানব পাচার সংক্রান্ত টি মামলা নথিবদ্ধ হয়েছে ও তা তদন্ত পক্রিয়া চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ড্রাগস পাচার, ছাগসের অপব্যবহার ও মানব পাচার প্রতিরোধে বিচার বিভাগেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এনডিপিএস আইনের অধীনে মামলা নথিভূক্ত ও তদন্ত করা হলেও আমিনের বিষয়ে কঠোর দৃষ্টি ভঙ্গি না নেওয়া হলে এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার বৃদ্ধি না পেলে আমরা এই সমস্যাটিকে মূল থেকে নির্মূল করতে সক্ষম হবনা। এক্ষেত্রে অবশ্যই এই আইনের সাথে জড়িত প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি মাথায় রেখে পুলিশকে এই জাতীয় মামলাগুলি খানখভাবে তদন্ত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন এই আলোচনাচক্র ড্রাগস পাচার, মানব পাচার সন্ত্রাসিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে দিশা দেখাবে। অনুষ্ঠানে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস বলেন, ক্রস বর্ডার সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধ যেমন আন্তর্জাতিক ড্রাগস পাচার ব্যবস, মানব পাচার, সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের আলোচনাচক্র ইতিবাচক পথ দেখাবে। ত্রিপুরা রাজ্যের প্রায় সবগুলো জেলা আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা বেষ্টিত হওয়ার ফলে এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিগুলিকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। আলোচনাচক্রে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্চয় করেন, ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অপরেশ কুমার সিং ও বিচারপতি অরিন্দম লোধ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে.কে সিনহা, ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি টি অমর নাথ গৌড়, অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থ শংকর দে প্রমুখ।