জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- জনজাতি গৌরব দিবসের বিশেষ উপলক্ষে গুজরাটের নর্মদা জেলার জনজাতি অধ্যুষিত দেদিয়াপাড়া শহরে প্রায় ৯,৭০০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ— চারটি ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিয়ে নেওয়া এসব উদ্যোগ বিশেষভাবে জনজাতি উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিত।
বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘হাজার বছরের ইতিহাসে ভারতীয় চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো আদিবাসী সমাজের গৌরব ও আত্মমর্যাদা। দেশের সম্মান ও স্বরাজের প্রশ্ন উঠলে জনজাতি সমাজ সবসময় সামনের সারিতে থেকেছে।’’
তিনি জানান, আজ ‘শ্রী গোবিন্দ গুরু চেয়ার ট্রাইবাল ল্যাংগুয়েজ প্রোমোশন সেন্টার’-এরও উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন জনজাতির ভাষা–উপভাষা নিয়ে গবেষণা হবে এবং তাদের গল্প, গান ও ঐতিহ্য সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হবে।
দিনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী মোদী সুরাটে পৌঁছে মুম্বাই–আহমেদাবাদ হাই-স্পিড রেল করিডোর (MAHSR) প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। আন্ত্রোলি এলাকায় নির্মীয়মাণ বুলেট ট্রেন স্টেশন ঘুরে দেখেন তিনি এবং প্রকল্প–সংক্রান্ত আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
৫০৮ কিমি দীর্ঘ এই হাই-স্পিড করিডোরের মধ্যে ৩৫২ কিমি গুজরাট ও দাদরা-নগর হাভেলিতে এবং ১৫৬ কিমি মহারাষ্ট্রে পড়ে। দেশের অন্যতম উচ্চাকাঙ্ক্ষী এই প্রকল্প আধুনিক প্রকৌশল মান অনুযায়ী তৈরি করা হচ্ছে। পুরো রুটের ৮৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪৬৫ কিমি অংশ এগিয়ে চলছে উঁচু ভায়াডাক্টে— যা ভূমি ব্যবহারে সাশ্রয়ী ও নিরাপত্তা–বান্ধব। ইতিমধ্যেই ৩২৬ কিমি ভায়াডাক্টের কাজ ও ২৫টির মধ্যে ১৭টি নদীসেতুর নির্মাণ শেষ হয়েছে।
প্রকল্প শেষ হলে মুম্বাই ও আহমেদাবাদের দূরত্ব বুলেট ট্রেনে মাত্র দুই ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া যাবে— যা ব্যবসা, পর্যটন ও আঞ্চলিক উন্নয়নে বড় পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৪৭ কিমি দীর্ঘ সুরাট–বিলিমোরা অংশের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। সুরাট স্টেশনের নকশা শহরের বিশ্বখ্যাত হিরে শিল্প থেকে অনুপ্রাণিত, এবং এখানে থাকছে প্রশস্ত লাউঞ্জ, যাত্রী–বান্ধব সুবিধা, খুচরো দোকানসহ বিভিন্ন সুযোগ। স্টেশনটি সুরাট মেট্রো, সিটি বাস ও ভারতীয় রেলের সঙ্গে সহজ সংযোগ তৈরি করবে।

