জনতার কলম ওয়েবডেস্ক :- বছর অতিক্রান্ত অনেকেরই স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছে। কিন্তু তিনি যে ভুলতে পারেননি, বুধবার সেই ঘটনার স্মৃতি উসকে দিলেন সোনিয়া-তনয়া তথা ওয়েনাডের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। জানালেন, আজকের দিনেই আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি ও ধসে ভেসে মারা যায় প্রায় ২৫০ মানুষ। পরিসংখ্যান দিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে জানালেন, ১ হাজার ৬০০ বাড়ি ভেঙে পড়ে। ১৭টি পরিবারের সকল সদস্যর মৃত্যু হয়। এদিন সংসদে দাঁড়িয়ে একবছর পরেও কেন্দ্র যে বিপদগ্রস্তদের সম্পর্কে পুরোপুরি উদাসীন তাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি। প্রিয়াঙ্কার আবেগঘন বক্তৃতার সময় কার্যত নিশ্চুপ ছিল লোকসভা।
বছর গড়িয়ে গিয়েছে। আজও প্রিয়াঙ্কার লোকসভা কেন্দ্র ওয়েনাডের হাজার হাজার মানুষ কার্যত গৃহহীন। সরকারি, রাজনৈতিক ও কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের বদান্যতায় দিনযাপন করছেন তাঁরা। বারবার কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়ে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বিপর্যস্ত পরিবার গুলিকে বাঁচাতে কানাকড়িও খরচ করেনি নরেন্দ্র মোদি সরকার। ওয়েনাডের মানুষের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা স্মস্মরণ করিয়ে সংসদে প্রিয়াঙ্কা জানান, “বিধ্বংসী বন্যা ও ধসে কয়েকশো একর জমিতে ধস নেমেছিল। ফসল নষ্ট হয়েছিল। মানুষ এখনও কার্যত দিশাহারা। কারণ এখানকার সিংহভাগ মানুষ চা ও কফি চাষের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও অনেক গরিব মানুষ ছোট ছোট ব্যবসা করতেন, অটো ও জিপ চালিয়ে দিন গুজরান করতেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, বছর গড়িয়ে গেলেও আজও একটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করেনি।” প্রিয়াঙ্কা বলেন, “সাহায্যের জন্য একাধিকবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে বিপদে থাকা মানুষের জন্য সাহায্যর আবেদন জানিয়েছি। কিছু সাহায্য করলেও তা ঋণ হিসাবে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে মানুষগুলি সব হারিয়েছেন তাঁরা কীভাবে ঋণ শোধ করবেন।” কেরল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই ঋণ মকুবের নির্দেশ দিলেও কেন্দ্র কর্ণপাত করেনি।
এদিন সংসদে দাঁড়িয়ে ফের বিপর্যস্ত পরিবারগুলির ঋণ মকুবের আবেদন জানান প্রিয়াঙ্কা। তাঁর আবেদন, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র ১০ কোটি ব্যক্তিগত ঋণ ও ৩৬ কোটি টাকা কৃষিঋণ দিয়েছে। এই অর্থ অত্যন্ত সামান্য। কেন্দ্র এই ঋণ মকুব করে দিলে মানুষগুলির সুরাহা হয় বলে জানান তিনি সংসদ চলছে। তাই ঘটনার পর একবছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এদিন সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন সোনিয়া-তনয়া।