Site icon janatar kalam

কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকার মানুষের আস্থা অর্জন করছে : মুখ্যমন্ত্রী 

জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ স্বচ্ছতার সাথে রূপায়ণ করা হচ্ছে। এই সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকার মানুষের আস্থা অর্জন করছে। আজ বিশালগড় মহকুমার পূর্ব লক্ষ্মীবিলে কৃত্রিম অঙ্গ প্রস্তুতকারক কর্পোরেশনের সহায়ক উৎপাদন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমিপুজন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়ন না হলে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ নির্দেশনায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি আজ উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে। একের পর এক নতুন প্রকল্প পেয়ে এই অঞ্চলের রাজ্যগুলি উপকৃত হচ্ছে।

বিশালগড় ব্লকের অন্তর্গত পূর্ব লক্ষ্মীবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫ একর জায়গা নিয়ে ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায় বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা আর্টিফিসিয়াল লিম্বস ম্যানুফেকচারিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এএলআইএমসিও) উদ্যোগে কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির সেন্টারটি গড়ে উঠবে। এর ভূমিপুজন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিব্যাঙ্গজনদের সঠিক প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা দেওয়া হলে তারাও সমাজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। এর অনেক উদাহরণ আমাদের কাছে আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় সমাজের এই অংশের মানুষদের নানা প্রকল্পে সহায়তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্যের মহিলারা আজ আত্মনির্ভর হওয়ার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে রাজ্যে ৫৬ হাজার স্বসহায়ক দল গঠিত হয়েছে। এই দলগুলির ৪ লক্ষ ৫০ হাজার মহিলা সদস্যা প্রায় ৭০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়ে আজ নানা বিষয়ে আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বেশি করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্যে বিভিন্ন শিল্পদ্যোগী সংস্থা ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনের জন্যে উদ্যোগী হয়েছেন। রাজ্যে শান্তি, সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রয়েছে বলেই বিষয়টি সম্ভব হচ্ছে। প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যদিয়ে সবকা সাথ সবকা বিকাশের মূলমন্ত্র কার্যকর করার আন্তরিক প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন এবং খাদ্য গণবণ্টন ও ভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বনওয়ারী লাল ভার্মা বলেন, দেশের ইতিহাসে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম এই ধরণের কারখানা স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরছে। সমাজের সব অংশের মানুষের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিটি রাজ্যের কোনায় কোনায় উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, যত দুর্বল অংশের মানুষই হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার পাশে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে এই বিষয়টি ফুটে উঠছে। দেশের বর্তমান সরকার দিব্যাঙ্গজনদের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। দিব্যাঙ্গ অংশের মানুষজন আজ খেলাধুলা সহ নানা ক্ষেত্রে তাদের সাফল্যের ছাপ রাখছেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিস্কু রায় বলেন, রাজ্য সরকার দিব্যাঙ্গজনদের খেলাধুলা, পড়াশুনা সহ নানা ক্ষেত্রে সহায়তা করে যাচ্ছে। রাজ্যের ৮টি জেলাতেই দিব্যাঙ্গজনদের ভাতা সহ নানা বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই কারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে পূর্ব লক্ষ্মীবিলের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। সভাপতির ভাষণে তিনি বলেন, দিব্যাঙ্গজনরা যাতে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারেন সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করে চলেছে। এজন্য নেওয়া হয়েছে নানা প্রকল্প। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এএলআইএমসিও’র সিএমডি প্রবীন কুমার। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিধায়ক সুশান্ত দেব, কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের উপসচিব এ কে পান্ডে, অধিকর্তা টি কে দাস, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ড. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ৩৯ জন দিব্যাঙ্গজনের হাতে নানা সহায়ক সামগ্রী তুলে দেন।

Exit mobile version