জনতার কলম আগরতলা প্রতিনিধি:-গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে প্রাণীসম্পদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আজ প্রাণী পালন শুধু জীবিকা নির্বাহের উপায় নয়, বরং এটি রাজ্যের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বৃহস্পতিবার আর কে নগরের পশু চিকিৎসা বিজ্ঞান ও পশুপালন কলেজের ১৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী কলেজের একাডেমিক বিল্ডিং-এর এক্সটেনশন কাজ, আধুনিক ল্যাবরেটরির উদ্বোধন এবং স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরেরও সূচনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণী চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাজ্যকে দুধ, ডিম ও মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে দপ্তর নানা প্রকল্প রূপায়ণ করছে। বর্তমানে রাজ্য মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এবং দুধ ও ডিম উৎপাদনেও সেই পথে এগিয়ে চলেছে। দুধ উৎপাদক সমবায় সমিতির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্তও উন্মোচিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের গরিমা ভারতের অন্য কোনো কলেজের চেয়ে কম নয়। কলেজের সুনাম বজায় রাখতে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্বশীল হতে হবে। নিয়মিত অধ্যয়ন ও গবেষণার মাধ্যমেই উৎকর্ষতা অর্জন সম্ভব।” মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের পশুপালকদের সুবিধার্থে একাধিক প্রকল্প চালু হয়েছে — মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গো-ধন প্রকল্প, প্রাণীপালক সম্মাননিধি, ভ্রাম্যমান পশু চিকিৎসা ইউনিট, মুখ্যমন্ত্রী প্রাণী সম্পদ বিকাশ যোজনা, হাঁস-মুরগি পালন প্রকল্প ও ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ৫৫টি নতুন মিনি মোবাইল ভেটেরিনারি ইউনিট চালুর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ হাঁস প্রজাতির উপর গবেষণার জন্য ড. জুয়েল দেবনাথকে মুখ্যমন্ত্রী সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।
প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী শুধাংশু দাস বলেন, “২০০৯ সালে কলেজের পথচলা শুরু হয়েছিল। আজকের দিনটি তাই ঐতিহাসিক। প্রাণীসম্পদ দপ্তর তিনটি মূল ক্ষেত্র — প্রাণীসম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।” তিনি দপ্তরের মোবাইল ভেটেরিনারি ইউনিট অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব ড. দীপা ডি. নায়ার, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল প্রমুখ। ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন কলেজের অধ্যক্ষা প্রফেসর (ডা.) পূরবী বর্মন।

