জনতার কলম ত্রিপুরা আগরতলা প্রতিনিধি :- এ যেন খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় । এ এক মায়ের আত্মকথা। যে মা অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়েছিল শিশু বিক্রি করতে । যে গল্পের শুরুটা মায়ের বেদনা ভরা এক জীবন সৈলি ।কোন মা কি পারে তার সন্তান বিক্রি করতে । উত্তর ভেসে আসছে না কখনোই সম্ভব না । মা শত অভাব অনটনের মধ্যেও চায় তার সন্তানকে নিয়ে সুখী থাকতে । কিন্তু এ গল্পের অবতারণা অন্য এক মুড়ে ঘুরিয়ে দিয়েছিল । মা সত্যি সত্যি বাধ্য হয়েছিল তার সন্তানকে বিক্রি করে দিতে । কিন্তু কি করবে অভাব যে তার কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না । হয়তো কোনও এক সময় সে মায়ের দুচোখ দিয়ে ঝড় ঝরিয়ে জল পড়তো । মা যেন ভুলেও ভুলতে পারছে না তার সেই ফুটফুটে সন্তান বিক্রির করুন কাহিনীর কথা । তাও মাত্র ত্রিশ হাজার টাকায় । এক অসহায় পিতা তিন সন্তানের সংসারে বাধ্য হয়েছিল সবথেকে ছোট্ট একদিনের শিশুটিকে বিক্রি করে দিতে । কিন্তু সেখানে যেন বিধাতাও হার মেনেছে ।প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে এক অসহায় পিতার সবকটি বাচ্চা লালন পালন করার । নতুন করে বাঁচার রসদ খুঁজে পেল এক অবলা নারী । ছোট্ট ফুটফুটে শিশুগুলিও খুঁজে পেল তাদের নতুন আস্তানা । প্রশাসনের তরফে তেলিয়ামুড়ার মুঙ্গিয়াকামির চাকমা ঘাটে অবস্থিত হলুদিয়া নামে এক জুমিয়া পরিবার । পরিবারটি শুধু তিন মাসের জন্য এই এলাকায় বসবাস করে । বছরের বাকি সময়টুকু কাটিয়ে দেয় জরা জীর্ণ কুঁড়েঘরে । স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে কোনক্রমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে এই জুমিয়া পরিবারটি । প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দেওয়া হবে তার পারিবারিক রেশন কার্ড , রেগার জব কার্ড , এছাড়াও বর্তমানে চারটি শিশুর ভরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করবে প্রশাসন । যাইহোক দেরিতে হলেও জীবনের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে অসহায় এই জুমিয়া পরিবারটি । যে বাবা তার ঔরসজাত সন্তানকে বিক্রি করতে পেরেছে , সেই বাবার আর্তনাদে বুক যেন আজ জ্বালা- ফালা । কতটুকু অসহায় হলে পরে এক পিতা পারে তার সন্তানকে বিক্রি করতে । সে গল্পের অবতারণা আজ আর নাইবা বলা হলো । তবে এক সভ্য সমাজ সাক্ষী রইল সন্তান বিক্রির । ততক্ষণে এক অবলা নারীও হয়তো বুঝে গেছে তার অপরাধ প্রবণতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ।আজ হয়তো বা একটা অবলা শিশু খুঁজে পেল তার ঠিকানা । পাশাপাশি একজন মা পেল তার আদরের সেই ছোট্ট খোকাকে । সমাজ সচেতনতা এতটুকু বার্তাই যেন প্রত্যেকের কাছে থাকে । আসুন আর সন্তান বিক্রি নয় আমরা একে অপরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই । মুঙ্গিয়াকামি ব্লক , মহকুমা প্রশাসন ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের দৌলতে জীবনের ঠিকানা খুঁজে পেল এক অসহায় শিশু । হয়তোবা তার বাঁচার এই রসদ এক নতুন ঠিকানা এনে দেবে । শিশু খুঁজে পেল তার মাকে আর মা খুঁজে পেল তার শিশুকে । এক অসহায় পিতা খুঁজে পেল তার বাবাকে ।